পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্ত হয়েও আইনি সহায়তা পায়নি ভুক্তভোগী পরিবার
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বরিশাল নাগরীর রুপাতলী ২৪ নং ওয়ার্ডে আজিজিয়া রিয়েল এস্টেট লিমিটেডে’র আজিজিয়া মডেল টাউনে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমি দখল করে ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ভূমিদস্যু দেলোয়ার মীর গংদের বিরুদ্ধে। ভূমিদস্যু চক্রটি নানাভাবে প্রভাব বিস্তার করায় ঘটনার পর পুলিশকে জানিয়েও প্রতিকার পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মামলা এবং অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বিগত ২০১৩ সালের ২ মার্চ রেজিষ্ট্রিকৃত ৪০০৮নং ব্যাপক আমমোক্তারনামা দলিল মূলে মোঃ এমরানুল হক এস. এ. ২১৩০নং খতিয়ান হইতে .১১ একর ভূমির মালিকানা প্রাপ্ত হন। পরবর্তীতে মোঃ এমরানুল হক দাতা হয়ে বিগত ২০১৩ সালের ১৮জুন রেজিস্ট্রিকৃত ৮০৬৮নং সাফ কবালা দলিল মূলে এস. এ. ১৪৮৮, ১৪৮৯ দাগ তথা বি.এস. ডি.পি. ৩৬২৩নং খতিয়ানের ১৫৯২৫নং দাগ হইতে ৬.৭২ শতাংশ জমি ডাঃ মনিরুজ্জামান শাহীন গংদের কাছে বিক্রি করে সরেজমিন দখল বুঝিয়ে দেন। ডাঃ মনিরুজ্জামান শাহিন গংরা তাদের নামি ভূমি সম্পর্কে বরিশাল সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের আদেশ বলে নিজনামে পত্তন পূর্বক সরেজমিনে ভোগ দখলে থাকেন। হঠাৎ একযুগ পর বিক্রয়কৃত ওই ৬.৭২শতাংশ সম্পত্তির দাবীদার হয়ে ওঠে বিসিসির মীরাবাড়ী ২৪নং ওয়ার্ডের মানিক মীরার ছেলে মোঃ দেলোয়ার মীর, রূপাতলী ২৪নং ওয়ার্ডের সিদ্দিকের ছেলে পলাশ, আবুল কালামের ছেলে বেল্লাল হোসেন। এদিকে ওই সম্পত্তিতে বিরোধ দেখে ডাঃ মনিরুজ্জামান পুনঃরায় মোঃ এমরানুল হককে তার সম্পত্তি ফেরত দেয়। এমরানুল হক জীবিত থাকা অবস্থায়ই দেলোয়ার মীর গংরা ওই সম্পত্তির উপর ঘর তোলার অপচেষ্টা চালায়। এ কারনে মোঃ এমরানুল হক সম্পত্তির উপর আদালতের নিষেধাজ্ঞা চেয়ে বাদী হয়ে বরিশাল বিজ্ঞ সদর সহকারী জজ আদালতে একটি দেওয়ানী মোকদ্দমা যাহার নং- ৩৮৮/২০২২ দায়ের করেন। আদালত উভয় পক্ষের বিজ্ঞ কৌশুলীর সম্মতিক্রমে নিষেধাজ্ঞা দরখাস্তের তফসিল বর্নিত সম্পত্তিতে ন্যায় ও সুষ্ঠ বিচারের স্বার্থে মোকদ্দমা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উভয় পক্ষকে স্ব-স্ব দখল ও ব্যবহার অনুযায়ী স্থিতিশীলতা অবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু নির্মম পরিতাপের বিষয় মামলার বাদী মোঃ এমরানুল হক গত ১০ এপ্রিল ঢাকার সায়েদাবাদ বাসস্টপেজে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। তবে কিভাবে মৃত্যু হয়েছে তার প্রত্যক্ষ সাক্ষী ছিল না কেউ। শুধু হাসপাতালে গিয়ে লাশ সনাক্ত করে আনতে হয়েছে স্ত্রী সন্তানদের। যে মৃত্যু স্বজনদের পাশাপাশি বন্ধু-বান্ধব শুভাকাঙ্খীদের মেনে নিতে কষ্ট হয়েছিল। শুভাকাঙ্খীদের মধ্যে থেকে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিল এটা স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, পিছনে রহস্য লুকিয়ে থাকতে পারে। এদিকে দৈনিক সংবাদ সকাল পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ এমরানুল হকের মৃত্যুর পর ভূমি দস্যু দেলোয়ার মীরগংরা আদালতের নিষেধাজ্ঞা সহ কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে বিরোধীয় সম্পত্তিতে জোরপূর্বক ঘর উত্তোলন করে। শুধু ঘর উত্তোলন করেই ক্ষান্ত হয়নি, নিজেদের দখলদারিত্ব বুঝাতে ভূমিদস্যু চক্রটি প্রভাব খাটিয়ে তড়িঘড়ি করে বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপন এবং নিজস্ব লোকজন ভাড়াটিয়া হিসেবে ঘরে উঠিয়ে দেয়। এ বিষয়ে সুরাহা চেয়ে স্বামীহারা আলহাজ্ব ড. মাওঃ মোঃ এমরানুল হক এর স্ত্রী খাদিজা বেগম এতিম সন্তানদের নিয়ে একাধিকবার পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও কোন প্রতিকার পায়নি। মোঃ এমরানুল হকের স্ত্রী এ প্রতিবেদককে জানান আমরা ঢাকাতে পরিবারসহ বসবাস করায় বরিশালে আমার স্বামীর শত্রু মিত্র সম্পর্কে এত ধারণা ছিল না। মৃত্যুর পর দেখছি একটি চক্র তার সহায়-সম্পত্তি আত্মসাৎ করতে সব সময় তৎপর ছিল। এসব ঘটনার মাঝে অনেক রহস্য লুকিয়ে থাকতে পারে। বর্তমানে আমি আমার সন্তানদের নিয়ে নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি। আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও জোরপূর্বক জমিতে ঘর উত্তোলনের ব্যাপারে পলাশের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা বাতিল চেয়ে জজকোর্টে আবেদন করা হয়েছে। এজন্য দেলোয়ার মীর কাজ করাচ্ছে।