নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ গৌরনদী উপজেলার দক্ষিন বাউরগাতী গ্রামের প্রবাসী সেলিম মোল্লার বাড়িতে আঁতশবাজি ফুটিয়ে ঘরের লোকজনকে জিম্মি করে চুরি, লুটপাট ও ভাঙচুরের অভিযোগে মামলা দায়ের পরবর্তী আসামি গ্রেফতার হলে আবারও দফায় দফায় হামলা ভাঙচুর লুটপাট ও বাসার লোকজনকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে পুরুষ ও লেডি সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনার পর প্রবাসী সেলিম মোল্লার পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতায় পালিয়ে বেড়াচ্ছে। সরেজমিনে খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে প্রবাসী সেলিম মোল্লার পরিবার থেকে অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে না পেরে স্থানীয় একটি সঙ্ঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্র গত ৩১ মার্চ সকাল ১০টার দিকে সেলিম মোল্লার বাড়ির ভিতরে আঁতশবাজি ফুটিয়ে লোকজনকে জিম্মি করে লুটপাট এবং ভাঙচুর চালায়। এ সময় সেলিম মোল্লার বাসায় থাকা স্ত্রী, সন্তান ও পুত্রবধূ বাসার দরজা আটকে দিয়ে কোনমতে জানে বাঁচে। এরপরেও সন্ত্রাসীরা বাহির থেকে তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখলে তারা ৯৯৯ ফোন দেয়। পরবর্তীতে প্রায় তিন ঘন্টা পর পুলিশ এসে তাদেরকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় গত ১১ এপ্রিল সেলিম মোল্লার স্ত্রী জুলেখা বেগম বাদী হয়ে গৌরনদী থানায় একটি (১১/১০৩নং) মামলা দায়ের করে। মামলার আসামিরা হল যথাক্রমেঃ হাচান মোল্লার ছেলে জহির মোল্লা(৩০), হাশেম ফকিরের ছেলে ডালিম ফকির(২৮), হোচেন মোল্লার ছেলে খোকন মোল্লা(৩৫),আনোয়ার মোল্লার ছেলে হান্নান মোল্লা(২৬), ইউনুছ মোল্লার স্ত্রী নাজমা বেগম(৩৮), লিটন মোল্লার স্ত্রী হাচিনা বেগম(২৫) এবং খৈয়ম মোল্লা(৪২) এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরো ৭/৮ জনকে আসামি করা হয়। এদিকে গত ১৫ এপ্রিল ওই মামলার ১ নম্বর আসামি জহির মোল্লাকে আটক করে পুলিশ। আটকের জের ধরে জহির মোল্লার স্বজন ও তাদের ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা প্রবাসী সেলিম মোল্লার বাড়িঘরে ১৫এপ্রিল বিকেল ৪টার দিকে দফায় দফায় হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। হামলা লুটপাটে পুরুষদের সাথে লেডি সন্ত্রাসীরাও নেতৃত্ব দেয়। সন্ত্রাসীরা এ সময় নগদ অর্থ, স্বর্ণের চেইন এবং মূল্যবান মালামাল নিয়ে যায়। হামলায় আহত হয় সুমাইয়া খানম(২০)এবং জামিয়া আক্তার(৯)। মাটির সাথে গুঁড়িয়ে দেয় রান্নাঘর, ঘরের প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র সহ বহু মূল্যবান জিনিসপত্র। সন্ত্রাসীরা মামলার বাদী জুলেখা বেগমকে ৩ঘন্টা বাসায় জিম্মি করে রাখে। পরবর্তীতে আবারো ৯৯৯ফোন দিলে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় প্রবাসী সেলিম মোল্লার স্ত্রী জুলেখা বেগম বাদী হয়ে বরিশাল’র বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ৮/১০জনকে আসামি করে গত ১৭ এপ্রিল আরো একটি মামলা দায়ের করেছে। আদালত মামলাটি ডিবি পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেন। মামলার আসামিরা হলো, আনোয়ার মোল্লার ছেলে হান্নান মোল্লা, হান্নান মোল্লার স্ত্রী ঋতু বেগম, জহির মোল্লার স্ত্রী শিউলি বেগম, লিটন মোল্লার স্ত্রী হাছিনা বেগম, জহির মোল্লার মেয়ে জুই বেগম, সালাম মোল্লার মেয়ে লিনজা বেগম, লিটন মোল্লার মেয়ে মেঘা, খোকন মোল্লার মেয়ে খুকু, রিপন মোল্লার স্ত্রী রেবা বেগম, খইয়ম মোল্লার স্ত্রী নিপা বেগম, ইউনুস মোল্লার স্ত্রী নাজমা বেগম, সালাম মোল্লার স্ত্রী টুলু বেগম, ইউনুস মোল্লার মেয়ে সাবিহা, সাজিত মোল্লা। এদিকে একের পর এক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে এলাকার নিরীহ মানুষের। ভুক্তভোগী পরিবার এবং এলাকার সাধারণ মানুষ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ, সেনাবাহিনী সহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন।