নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পর্যটন নগরী সাগরকন্যা কুয়াকাটায় পর্যটকদের পদচারণায় কানায় কানায় পরি পূর্ণ হয়ে গেছে শুক্রবার ১১ অক্টোবর। গতকাল বিকেল থেকেই পর্যটকদের আগমনে সর্বত্রই উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। শারদীয় দূর্গা পুজা আর সাপ্তাহিক ছুটিকে সামনে রেখে সরকারি ছুটির ফাঁকে পর্যটকের ঢল নেমেছে কুয়াকাটায় । এমন তথ্যই জানিয়েছেন কুয়াকাটার পর্যটন নির্ভর সকল ব্যবসায়ীরা। কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এম এ মোতালেব শরীফ বলেন, দীর্ঘদিন পরে কুয়াকাটায় পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক থাকলে সারাবছর পর্যটকদের আনাগোনা থাকে কুয়াকাটায়। অনেক দিন পরে আমাদের ব্যস্থতা বেড়েছে। আশা করি সামনের দিনেও এমন দৃশ্য চোখে পড়বে। আজ সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুয়াকাটার জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু করে আশেপাশের ১কিঃমিঃ জায়গা জুড়ে পর্যটকদের হৈ-হুল্লোড় আর পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত । সমুদ্রের বুকে কেউ ঝাঁপিয়ে পড়ছে কেউ বা আবার দলবেঁধে সাতার কাটছে। আনন্দ উপভোগের দৃশ্য স্মৃতিপটে ধারণের জন্য কেউ বা আবার ছবি তুলছে। তবে সৈকতের বেহাল দশা দেখে হতাশ আগত পর্যটকরা। তারা বলছে এত সুন্দর সৈকতের এমন বিশ্রী অবস্থা! যত্রতত্র পড়ে আছে জিও টিউব আর জিও ব্যাগ। এসবে নির্বিঘ্নে উপভোগ করা যায়না আসল সৌন্দর্য।
এ বিষয়ে পর্যটক সোয়াইব বলেন, আমি এই প্রথম কুয়াকাটায় বেড়াতে আসলাম। সৈকত আর সাগরের ঢেউ আমাকে বেশ মুগ্ধ করেছে। অন্যদিকে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ায় ব্যস্থতা দেখা গেছে কুয়াকাটার সকল রেস্তোরাঁসহ পর্যটননির্ভর সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। হোটেল মোটেলের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে তাদের আবাসিক হোটেলে বুকিং ভালো আছে। পর্যটকদের উপস্থিতিতে স্বস্তি ফিরছে। তাদের আশা এখন থেকে এমন পর্যটকদের আনাগোনা থাকলে তাদের ব্যবসায়ীক সংকট কাটিয়ে উঠবে খুব শ্রীঘ্রই।
এ বিষয়ে বেস্ট সাউদার্ন আবাসিক হোটেলের জেনারেল ম্যানেজার আবুল কালাম বলেন, টানা ছুটিতে আমাদের আবাসিক হোটেল শতভাগ রিজার্ভেশন। অনেকদিন পরেই এমন পর্যটক আসল কুয়াকাটায়। আমরা পর্যটকদের চাহিদাকে সব সময়ই প্রধান্য দেই। পর্যটক আগমনে বেচা বিক্রি বেড়েছে সৈকত লাগোয়া ব্যবসায়ীদের। আগের থেকে ব্যস্থতা বেড়েছে। সৈকত লাগোয়া চা বিক্রেতা মো. সোহেল বলেন, গত কাল থেকে চোখে পড়ার মত পর্যটক কুয়াকাটায় আসছে। বেঁচা বিক্রি বাড়তে শুরু করছে। আশা করি ঘাটতি পুষিয়ে উঠতে পারব। ক্যামেরাম্যান আল-আমীন বলেন, গতকাল থেকেই মোটামুটি পর্যটক আসতে শুরু হয়েছে। আজ ভালোই পর্যটক বাড়ছে। আমরা আমাদের সংকট কাটাতে পারব। আচার বিক্রেতা মো. জসিম বলেন, পর্যটকরা এখন বেশি ক্রয় করেনা। শুধুই ঘুরে ফিরে চলে যায়। তবে আগের চাইতে বিক্রি বাড়ছে। সৈকত লাগোয়া খাবার হোটেলর ব্যবস্থাপক মো. সেলিম বলেন, বিগত দিনে বেচা কিনা খুবই খারাপ ছিল । গত কাল ভালোই বিক্রি করতে পারছি। আজ আরো বাড়বে। এখন আমাদের দুশ্চিন্তা কাটবে। সৈকত লাগোয়া কাপড় ব্যবসায়ী মো. জলিল বলেন, বেঁচা কিনা নাই বিগত দেড় মাস ধরে। কিছু পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ছে আশা করছি দ্রুতই স্বরুপে ফিরবে আমাদের ব্যবসা বানিজ্য। ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা ( টোয়াক)’র পিআর, ইব্রহীম ওয়াহিদ বলেন, আমরা পর্যটকদের সেবায় সকল অপারেটরগব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। আমরা সাধ্যমত সেবা প্রদান করতে প্রস্তুত। কয়েকদিন ধরে পর্যটক আসতে শুরু করছে। ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিওনের পুলিশ সুপার মো. আনসার উদ্দিন বলেন, আমরা সম্পূর্ণভাবে পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য প্রস্তুত। দেশে চলমান অস্থিরতা কেটে যাওয়ার ফলে পর্যটক বাড়ছে কুয়াকাটায়। তাদের নিরাপদ ভ্রমনে যা যা করা দরকার তা সবি করা হবে এবং শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের পুরো টিম প্রত্তুত রয়েছে।